সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সুন্নতি সামগ্রীর অনুকরণে কিছু সুন্নতি সামগ্রীর ছবি (সংক্ষিপ্ত বর্ণনাসহ)

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আমার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব)

আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলেদিন, যদি তারা আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত লাভ করতে চায় তাহলে তারা যেনো আপনার অনুসরণ করে, তাহলে আমি আল্লাহ পাক স্বয়ং তাদেরকে মুহব্বত করবো, তাদেরকে ক্ষমা করবো, তাদের প্রতি দয়ালু হবো; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সুরা আল ইমরান ৩১)

সুন্নতের ফযীলত সম্পর্কে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে মুহব্বত করলো, সে মূলতঃ আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে আমাকে মুহব্বত করবে, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযী শরীফ)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, আখিরী যামানায় যে ব্যক্তি একটি সুন্নত আঁকড়ে ধরে থাকবে তথা আমল করবে তাকে এর বিনিময়ে একশত শহীদ এর ছওয়াব প্রদান করা হবে।

সুন্নতি পাগড়ি মুবারক:

b1cd9d12d66537a02ca15f22b7e94a47_xlarge

পাগড়ীর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: পাগড়ী পরিধান করা দায়েমী সুন্নত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বদা পাগড়ী মোবারক পরিধান করতেন। তিনি ঘরেও পাগড়ী মোবারক পরিধান করতেন। মক্কা শরীফ বিজয়ের সময়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মোবারক-এ কাল পাগড়ী মোবারক ছিল। উনার পাগড়ী মুবারক-এর নিচে এবং পাগড়ী মুবারক ব্যতীত শুধু টুপিও ব্যবহার করেছেন। Read the rest of this entry

👑কুরআনে বর্ণিত বরকতময় সুন্নতী ফল জয়তুন ফল

💖সুন্নতী খাবার জয়তুন (الزَّيْتُونِ) সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি জয়তুন বিষয়ে সরাসরি শপথ করে ইরশাদ মুবারক করেছেন- “শপথ ত্বীন এবং যয়তুনের।” (পবিত্র সূরা ত্বীন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১)

💖নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “এটি ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারি, বার্ধক্যকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং পেটের জন্য তেমন শীতল যেমন আগুনের সামনে বরফ।”

💖পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-“সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা জয়তুন খাও এবং জয়তুনের তেল গায়ে মাখো। কেননা এটি একটি মুবারক বৃক্ষ থেকে তৈরি।” (ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুত ত্ব‘য়ামাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৩১৯)

১. চোখের কালোদাগ দূর করে
২. রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
৪. তক্বে বয়সের ভাজ পড়া থেকে রক্ষা করে
৫. চুল পড়া রোধ করে
৬.খুশকির জন্য প্রতিশেধক
৭. হৃদরোগের প্রতিশেধক
৮. ত্বক ফাটা রোধ করে
৯. তক্বের রুক্ষতা দূর করে, উজ্জলতা বাড়ায়
১০. ডায়াবেটিক প্রতিরোধ করে
১১. ওজন কমায়
১২. কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করে

🌟উন্নতমানের এবং সতেজ জয়তুন ফল পাওয়া যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্রে।
অর্ডার করতে কল করুন,
☎️+8801782 255 244
ফেইসবুকে পেইজে অর্ডার করতে ইনবক্সে টেক্সট করুন।
অথবা
🌐 সরাসরি অর্ডার করতে ভিজিট করুন: https://sunnat.info/sunnati-foods/sunnati-olive-fruit

olive #oliveoil #fruits #fruit #olivefruits #organic #organicfruit #sunnati #RasoolAllah See less

📣খাটিঁ কালোজিরার তেল📣

“মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের শেফা”
🔖সুন্নতী খাবার কালোজিরা তেল ব্যবহারের উপকারিতা:
১. স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে: সুন্নতী কালোজিরা মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
২. চুল পড়া রোধে: সুন্নতী কালোজিরা চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছে দিয়ে চুল পড়া রোধ করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৩. ব্যথা কমাতে: যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে সুন্নতী কালোজিরার জুড়ি নেই।
৪. ফোঁড়া সারাতে: ব্যথাযুক্ত ফোঁড়া সারাতে সুন্নতী কালোজিরা সাহায্য করে।
৫. মাথা ব্যথায়: কপালের দুই পাশ এবং কানে পাশে দিনে তিন-চারবার সুন্নতী কালোজিরার তেল মালিশ করুন মাথাব্যাথা ভালো হয়ে যাবে।
৬. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সুন্নতী কালোজিরার তেল ব্যবহার করুন।
৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: সকালে খালিপেটে ১২/১৩ ফোঁটা সুন্নতী কালোজিরার তেল ও ১৫/১৬ ফোঁটা মধু খেলে ডায়াবেটিসের উপকার হয়।
৮. বাতের ব্যথায়: ১০/১২ ফোঁটা সুন্নতী কালোজিরার তেল গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে বাত রোগের উপকার হয় ।
🔖নিরাপদ এবং নির্ভেজাল সুন্নতী খাবার কালোজিরা তেল পাওয়া যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্রে।
অর্ডার করতে কল করুন,
☎️+8801782 255 244
ফেইসবুকে পেইজে অর্ডার করতে ইনবক্সে টেক্সট করুন।
অথবা ওয়েব সাইটে অর্ডার করতে-
🌐 ভিজিট করুন:https://sunnat.info/…/search&search=%E0%A6%95%E0%A6%BE…

oil #oilgas #oilpaint #oilandgas #oilpainting #oiloncanvas #oilpaintings #blackseed #blackseedoil #blackseedoilbenefits See less

📣ত্বকের যত্নে শামউন নাহল এর উপকারবিধি

১। ত্বকের যত্নে ব্যবহার করুন এন্টি এজিং ক্রিম “” শাম’উন নাহল “”
২. সকল প্রকার ত্বকে ব্যবহারোপযোগী
৩. তৈলাক্ত ত্বকে ভাব দূর করে
৪. রুক্ষ শুষ্ক ত্বকে কোমলতা নিয়ে আসে
৫. ত্বককে করে তোলে মসৃণ, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত
৬. প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে
৭. ত্বকে বয়সের ভাঁজ পড়া থেকে রক্ষা করে
৮. ঠোঁট ও ত্বক ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করে
৯. ত্বকের কোমলতা বৃদ্ধি করে
১০. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
১১. ত্বকের ফাঙ্গাসজাতীয় রোগ প্রতিরোধ করে
১২. ত্বকের কোষকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে ত্বক সুস্থ্য ও সুন্দর করে
১৩. চখের নিচের কালো দাগ দূর করে
১৪. মৌমাছির শরীর নিঃসৃত মোমে ভিটামিন এ থাকায় সেটি ফাটলের স্থানে কোলাজেন
উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ফাটলকে উল্লেখযোগ্য পরিমানে হ্রাস করে।”
✅ত্বকের যত্নে সুন্নতী প্রসাধনী শাম’উন নাহল পাওয়া যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্রে।
অর্ডার করতে কল করুন,
☎️+8801782 255 244
ফেসবুকে পেজে অর্ডার করতে ইনবক্সে টেক্সট করুন।
অথবা
🌐 আজই কিনুন : https://sunnat.info/shamun-nahal

antiaging #skin #skincare #skincareph #buityproduct #nahol See less

👑 কাঠের তৈরীকৃত খাছ সুন্নতী চৌকি 👑

🌙 এই এক অনন্য বরকতময় সুন্নত, শয়নে স্বপ্নে মুবারক নিসবত।
🟢 সবার ঘরেই হরেক রকম খাট, চৌকি বা শোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কিভাবে শোয়ার ব্যবস্থা করলে তা সুন্নত হবে আমরা কি কখনো ফিকির করেছি❓
🌱 নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত দাবীকারী হিসেবে সর্ববস্থায় উনার মুবারক নিসবত বা সম্পর্ক, তাশাব্বুহ বা মিল রাখার কোশেশে থাকা ঈমানী দায়িত্ব।
🌱 হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১ বিঘা উঁচু চৌকিতে বিশ্রাম মুবারক গ্রহন করেছেন।
কেউ যদি এই মুবারক সুন্নত পালন করে তাহলে তার শোয়া অবস্থায়, ঘুম অবস্থায়, স্বপ্ন দেখা অবস্থায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিল থাকলো। সুবহানাল্লাহ।
🌱 সারাবিশ্বে একমাত্র খাছ সুন্নতী চৌকির প্রাপ্তি স্থান হচ্ছে: আন্তর্জাতিক সুন্নত মুবারক প্রচারকেন্দ্র।
অর্ডার করতে কল করুন,
☎️+8801782 255 244
ফেইসবুক পেইজে অর্ডার করতে ইনবক্সে ম্যাসেজ করুন।
অথবা
🌐ভিজিট করুন: https://sunnat.info/sunnati-wooden-chouki?search=%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%9A%E0%A7%8C%E0%A6%95%E0%A6%BF

furniture #furniture #furnitureflip #furniturestore #furnitureartist #furnituremaker #wood #Woodland #woodentoys See less

🔵 এক বিলুপ্ত প্রাপ্ত সুন্নত মুবারক হচ্ছে চামড়ার বালিশ সুবহানাল্লাহ!

⭐ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খয়েরী রং-এর চামড়ার বালিশ মুবারক ব্যবহার করতেন। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ, খয়েরীর রং-এর চামড়ার বালিশ ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

⭐ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আমার মহাসম্মানিত হাবীব এবং রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ)

⭐ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, যদি তারা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত লাভ করতে চায়। তাহলে, তারা যেনো আপনাকে অনুসরণ করে, তাহলে আমি মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং তাদেরকে মুহব্বত করবো, তাদেরকে ক্ষমা করবো এবং তাদের প্রতি দয়ালু হবো; নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। সুবহানাল্লাহ! (সুরা আল ইমরান/১৩১)

⭐ পবিত্র সুন্নত মুবারকের ফযীলত সম্পর্কে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার সুন্নত মুবারক মুহব্বত করলো, সে মূলতঃ আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে আমাকে মুহব্বত করবে, সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

💎 কাজেই, পবিত্র সুন্নত মুবারক পালন করে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত মুবারক স্থাপন করার লক্ষেই আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচারকেন্দ্রে পাওয়া যাচ্ছে গরু এবং খাসীর চামড়ার তৈরীকৃত খাছ সুন্নতী বালিশ।
অর্ডার করতে কল করুন,
☎️+8801782 255 244
ফেইসবুক পেইজে অর্ডার করতে ইনবক্সে টেক্সট করুন।

অথবা
🌐 ভিজিট করুন: https://sunnat.info/sunnati-leather-pillow

leather #leatherpillow #pillows #sunnati See less

📣সুন্নতী চামড়ার নালাইন (জুতা)📣

হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু উনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দু’ফিতা বিশিষ্ট চামড়ার জুতা (স্যান্ডেল বা নালাইন শরীফ) পরিধান করতেন। (শামায়েলে তিরমিযী, জামে’উল ওসায়েল, আদাবুন নবী)
অর্থাৎ, উনার জুতা (স্যান্ডেল) মুবারক ছিল দু’ফিতা যুক্ত (ক্রস বেল্ট), যা সম্পূর্ণ (তলা-ও) চামড়ার দ্বারা নির্মিত এবং তা লাল-খয়েরী রংয়ের ছিল।

✅উন্নত মানের চামড়ার খাছ সুন্নতী নালাইন পাওয়া যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্রে।
অর্ডার করতে কল করুন,
☎️ +8801782 255 244
ফেইসবুক পেইজে অর্ডার করতে ইনবক্সে ম্যাসেজ করুন।

অথবা
🌐ভিজিট করুন:https://sunnat.info/index.php?route=product/search&search=%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8

shoes #shoestore #shoestyle #shoestagram #shoestyle #shoesforwomen #shoeslover See less

✳️

সুন্নতী মেসওয়াক

হযরত আবু উমামা রদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু পবিত্র হাদিস শরীফে ইরশাদ মুবারক করেনঃ

عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ما جاءني جبريل قط إلا أمرني بالسواك حتى لقد خشيت أن أحفي مقدم فمي»

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ইরশাদ মুবারক করেন, এমনটি কখনো হয়নি যে, হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনি আমার নিকট এসেছেন আর আমাকে মেসওয়াকের আদেশ দেননি।

এতে আমার আশংকা হচ্ছিল যে, (মেসওয়াকের কারণে) আমার মুখের অগ্রভাগ ছিলে না ফেলি।(আল মুযামুল কাবীর লিত তবারানী, হাদীস নং৭৮৪৭, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২২২৬৯)

অন্য হাদিস শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ইরশাদ মুবারক করেন,

لولا أن أشق على أمتي أو على الناس لأمرتهم بالسواك مع كل صلاة»

আমি যদি উম্মতের উপর (কষ্ট হবার) আশংকা না করতাম তাহলে প্রত্যেক নামাজেই মেসওয়াক করার আদেশ দিতাম। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং৮৮৭, মুসলিম শরীফ, হাদীস নং২৫২)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ইরশাদ মুবারক করেন,

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «فضل الصلاة التي يستاك لها على الصلاة التي لا يستاك لها سبعين ضعفا» تفرد به يحيى بن معاوية بن يحيى الصدفي ويقال إن ابن إسحاق أخذه منه

মেসওয়াক করে যে নামাজ আদায় করা হয়, সে নামাজে মেসওয়াকবিহীন নামাজের তুলনায় সত্তরগুন বেশী ফযীলত রয়েছে। (শুয়াবুল ঈমান, বাইহাকী, হাদীস নং ২৫১৯)

✅মিসওয়াক করার তরতীবঃ

১। মেসওয়াক কাচা ও নরম গাছের ডাল হওয়া উচিত, এতে মেসওয়াক করা সুবিধা হয়।

২। মেসওয়াক নিজ হাতের আঙ্গুলের মত মোটা ও এক বিঘত পরিমাণ লম্বা হওয়া উচিত।

৩। ওযু করার পূর্বে মেসওয়াক করা উত্তম।

৪। মেসওয়াক ধরার পদ্ধতি হল, ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলি মেসওয়াকের নিচে থাকবে। মধ্যমা ও তর্জনী উপরে ও বৃদ্ধাঙ্গুলি নিচে রেখে মেসওয়াক ধরা। এতে করে মুখের ভিতর ভালভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মেসওয়াক করা যায়।

৫। মুখের ডান দিক থেকে শুরু করা এবং উপর থেকে নিচে মেসওয়াক করা। আড়াআড়ি ভাবে না করা।

৬। ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর ও ঘুমানোর পূর্বে, নামাজের আগে, মজলিসে উপস্থিত হবার পূর্বে, কুরআন ও হাদীস পাঠের পূর্বে, খাওয়ার পর মেসওয়াক করা।

শিশু ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি রোমের বাদশাহ কতৃক প্রেরিত পাদ্রীকে যা জবাব দিলেন!

শিশু ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি রোমের বাদশাহ কতৃক প্রেরিত পাদ্রীকে যা জবাব দিলেন!

রোমের বাদশাহ এক পাদ্রী বা ধর্মযাজককে অনেক টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, আসবাবপত্র, মাল-সামানা দিয়ে বাগদাদ শরীফে পাঠালো। উদ্দেশ্য মুসলমান আলিম-উলামাগণ উনাদের সাথে মুনাযারা বা বাহাছে লিপ্ত হয়ে খ্রীস্ট ধর্মকে বিজিত করা। পাদ্রী বাগদাদ শরীফে পৌছে ঘোষনা দিলো, যে ব্যক্তি আমার চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে আমি তার ধর্ম গ্রহন করবো। আর আমার নিকট রক্ষিত ধনসম্পদগুলো তাকে পুরস্কার স্বরূপ দিয়ে দিবো। তবে যে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না তাকে আমাদের ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। আর আমাদেরকে ট্যাক্স বা জিজিয়া কর দিয়ে বশ্যতা স্বীকার করতে হবে। তার এই ঘোষণা যেন পুরো বাগদাদ শরীফের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ আকার ধারণ করলো।

সে পাদ্রী একটি প্রশস্ত রাস্তার মাথায় একটি উঁচু মিম্বর বসালো। তার উপর বসে তার বাহাদুরী জাহির করতে লাগলো। আম-খাছ সবধরণের লোকের উপস্থিতি ঘটলো। পাদ্রীদেরও আনাগোনা শুরু হলো। দিনের পর দিন সেই ভীড় বেড়ে যেতে লাগলো। সে তিনদিন ধরে গলা ফাটিয়ে সেই ঘোষণা দিতে লাগলো। প্রতিবাদী কোন লোকের আগমন না দেখে তার বাহাদুরীর পরিধি বেড়ে গেল।

উক্ত মজলিসে ৭/৮ বছরের একজন বালকের উপস্থিতি ঘটলো। যিনি উনার পিতার সাথে উপস্থিত হয়েছিলেন, এতো লোক একসাথে এখানে জমা হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য। বালকটি দেখতে পেলেন পাদ্রী তার কুট কৌশলের দাপট বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাহাদুরী দেখাচ্ছে। কিন্তু কেউ কোন সন্তোষজনক জাওয়াব দিচ্ছে না। বালক তিনি উনার সম্মানিত পিতা উনার কাছে পাদ্রীর প্রশ্নের জাওয়াব দেয়ার অনুমতি চাইলেন। বললেন, আব্বাজান! আপনি অনুমতি দিলে পাদ্রীর প্রশ্নের সন্তোষজনক জাওয়াব আমি দিতে পারি।

সেই বালক তিনি আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বয়স মুবারক তখন অল্প। উনার বয়স কেউ কেউ সাত বছরের কথা উল্লেখ করেছেন; অর্থাৎ শিশুকালের ঘটনা।

উনার পিতা বললেন, যেখানে অনেক বড় বড় আলিম-উলামাগণ কোন জাওয়াব দিচ্ছেন না, সেখানে আপনি কি জাওয়াব দিবেন? তিনি অনুমতি দিলেন না। পুনরায় বালক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় পিতার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করলেন। পিতা ধমকের সাথে বললেন, আপনি কি প্রলাপ বকছেন? আলিম উলামাদের সামনে আপনার কি বা জাওয়াব দেয়ার প্রমান আছে?

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ভাবগাম্ভির্যের সাথে মিম্বরের উপর বসলেন। বললেন, বলুন! আপনার সেই প্রশ্নাবলী কি কি?

পাদ্রী বললো, প্রথম প্রশ্ন, মহান আল্লাহ পাক উনার পূর্বে কি ছিল?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, গণিতের সংখ্যাগুলো আপনার স্মরণ আছে কি? স্মরণ থাকলে কিছু সংখ্যা গণনা করুন।
পাদ্রী বললো, এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, পূনরায় বলুন।
পাদ্রী বললো, এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, একের পূর্বে গণনা করুন।
পাদ্রী বললো, একের পূর্বে কিছু নেই। এক থেকে গণনা শুরু হয়।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, যখন রূপক সংখ্যার মাঝে একের পূর্বে কিছু না থাকে, তবে প্রকৃত একক মহান আল্লাহ পাক উনার পূর্বে কি কিছু থাকতে পারে?

পাদ্রী নিরুত্তর রইলো। কিছুক্ষণ পরে মাথা নেড়ে বললো, না কিছু থাকতে পারে না। আপনি ঠিকই বলেছেন।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বলো, আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন কি?

পাদ্রী বলো, ২য় প্রশ্ন বলুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এখন কোথায় আছেন?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনি কি একথা বলতে পারো যে, আপনার শরীরে রূহ কোথায়? রূহ তো আপনার ভিতরে স্বয়ং বিদ্যমান আছে।
পাদ্রী বললো, রূহের নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই। তা শরীরের সর্বত্র বিদ্যমান।
তিনি বললেন, রূহ যা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক মাত্র। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন-
    يسئلونك عن الروح قل الروح من امر ربى.
    অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। আপনি বলুন, রূহ হচ্ছে, আমার মহান রব আল্লাহ পাক উনার আদেশ মাত্র। অর্থাৎ উনার আদেশে সৃষ্টি হয়েছে।”
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, রূহ যা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশে সৃষ্টি হয়েছে এবং তা প্রত্যেক প্রাণীর মাঝে বিদ্যমান রয়েছে। অথচ আপনি তার অবস্থানের কথা বলতে পারছেন না। তাহলে রূহের সৃষ্টিকারী মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দিষ্ট স্থান ও পরিপূর্ণ মর্তবা কি আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন? তিনি তো সর্বত্র বিরাজমান। তিনি সর্বত্র হাযির-নাযির।

পাদ্রী ইহা শুনে লা-জাওয়াব (নিরুত্তর) রইলো। ক্ষীণ আওয়াজে বললো, নিঃসন্দেহে আপনার কথা যথার্থ ও বাস্তব।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনার তৃতীয় প্রশ্ন কি?

পাদ্রী বললো, ৩য় প্রশ্ন, মহান আল্লাহ পাক উনার চেহারা মুবারক কোন দিকে?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উপস্থিত একজনকে বললেন, একটি মোমবাতি নিয়ে আসুন। মোমবাতি নিয়ে আসা হলো। উনার নির্দেশে তা জ্বালানো হলো। তিনি পাদ্রীকে উদ্দেশ্য করে বললেন, বাতিটির মুখ কোন দিকে, বলুন?
পাদ্রী বললো, বাতিটির মুখ সবদিকে রয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোন দিক নেই। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আয’ম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বাতি একটি ধ্বংসশীল বস্তু। তার মুখ যদি সবদিকেই থাকতে পারে। চারিদিকে আলোকিত করতে পারে। তাহলে ফিকির করুন, মহান আল্লাহ পাক যিনি ওয়াজিবুল ওজুদ এবং আসমান যমীনকে আলোকিতকারী। তাহলে উনার চেহারা মুবারক কেন এবং কিভাবে কোন নির্দিষ্ট দিকে থাকতে পারে?

পাদ্রী হিকমতপূর্ণ জাওয়াব শুনে লা-জাওয়াব- নির্বাক হয়ে গেলো। উপস্থিত সকল লোক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নূরাণী চেহারা মুবারকের দিকে তাকিয়ে রইলো।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বললেন, বলো, আপনার চতুর্থ প্রশ্ন কি?

পাদ্রী বললো, ৪র্থ প্রশ্ন বলুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এখন কি করছেন?

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আযম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এটাই করলেন যে, আপনার মতো বয়সধারী অহঙ্কারী ও পবিত্র তাওরাত শরীফ ও পবিত্র ইঞ্জিল শরীফ-এর অভিজ্ঞ এবং ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসীকে মিম্বর থেকে নীচে নামিয়েছেন। আর আমার মত অল্প বয়সী, একত্ববাদে বিশ্বাসী মুসলমানকে মহান আল্লাহ পাক উনার অনুগত ত্বলিবে ইলিম (ছাত্র) শিশু সন্তানকে মিম্বরের উপর বসিয়ে দিলেন। আপনাকে দিলেন জিল্লত (অপমান) এবং আমাকে দিলেন ইজ্জত (সম্মান)। সুবহানাল্লাহ!

পরে রোমীয় পাদ্রী স্বীয় ওয়াদা ও শর্ত অনুযায়ী পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করলো-

لا اله الا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রসূল।”

(ইমামুল মুহাদ্দিসীন-১০৫)

সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়া হলো আখিরাতের শষ্যক্ষেত্র

দুনিয়াদার মানুষের ইন্তিকালের পর তার রেখে যাওয়া সম্পদ সাধারণত: হারাম কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিয়তের অপরিশুদ্ধতা, আক্বীদার বিপর্যস্ততা, সম্মানিত সুন্নত উনার প্রতি অনীহা, নেক আমলহীনতা, অসৎ উপার্জন, হারামের প্রতি আসক্তি ইত্যাদি নানাবিধ কারণে জীবদ্দশায় দুনিয়াদার মানুষের জীবন নির্বাহ সম্পূর্ণরূপে গাইরুল্লাহ-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় সে মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কোপানলগ্রস্ত হয়ে স্থায়ীভাবে জাহান্নামের বাসিন্দা হয়ে যায়। প্রেক্ষিত কারণে মরণের পরে তার রেখে যাওয়া সম্পদ হাক্বীক্বী নেক কাজে ব্যয় হওয়ার নযীর কখনোই দেখা যায় না। নাউযুবিল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে:

الدنياء مزرعة الاخرة

অর্থ: “দুনিয়া হলো আখিরাতের শষ্যক্ষেত্র।” আখিরাতে মানুষের সম্যক পরিণতি দুনিয়ায় জানা না গেলেও ঈমান, আক্বীদা, ইখলাছ এবং সম্পাদিত বাহ্যিক আমলের সূক্ষ্ম দর্শনে তার অবস্থা অনুভব করা যায়। এসব উপলব্ধি করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব না হলেও মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদের সূক্ষ্মদর্শিতায় দুনিয়াদার মানুষের হাক্বীক্বত জানা একান্তই সহজসাধ্য। কারণ দুনিয়াদার মানুষের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের পরিণতি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে কোন একদিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একটি বড় আকারের উটের বাথান ছিল। বাথানের উটগুলো ছিল খুবই হৃষ্টপুষ্ট। সেখানে এমন অনেক উট ছিল যাদের বাচ্চার দেয়ার সময় হয়েছিল। এই জাতীয় উট আরবের এক উৎকৃষ্ট সম্পদ। বাথানটির প্রতি দৃষ্টি মুবারক পড়ার সাথে সাথে তিনি দৃষ্টি মুবারক ফিরিয়ে নিলেন। ইহা দেখে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহু! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহা অতি উত্তম সম্পদ! ইহা দিকে দৃষ্টি মুবারক পড়ার সাথে সাথে আপনি দৃষ্টি মুবারক ফিরিয়ে নিলেন কেন?

তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে পার্থিব ধন সম্পদের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে নিষেধ করেছেন-

ولا تمدن عينيك الى ما متعنا به ازواجا منهم زهرة الحياة الدنيا لنفتنهم فيه ورزق ربك خير وابقى

অর্থ: (হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি ঐ সকল বস্তুর প্রতি কখনো আপনার চক্ষু মুবারক তুলেও তাকাবেন না যা মানবজাতির বহু সম্প্রদায়কে উপভোগের জন্য দেয়া হয়েছে। ইহা পার্থিব জীবনের শোভা বর্ধনকারী। যা দ্বারা তাদেরকে পরীক্ষা করা উদ্দেশ্য। আপনার জন্য আপনর রব তায়ালা যে রিযিক মুবারক নির্ধারণ করেছেন তা অতি উত্তম ও চিরস্থায়ী। (পবিত্র সূরা ত্ব-হা: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩১)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, যখন কোন লোককে মৌনতা অবলম্বনকারী (স্বল্পভাষী) এবং দুনিয়া বিরাগী (মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একমাত্র সন্তুষ্টি-রেযামন্দি হাছিলের নিমিত্তে সংসার জীবন যাপনকারী) দেখতে পাবে তখন উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে। কেননা হিকমত (তত্ত্বজ্ঞান) উনাদের সাথেই সাক্ষাত করে।

আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন

ومن يؤت الحكمة فقد اوتى خيرا كثيرا

অর্থ: “যাকে হিকমত দেয়া হয়েছে তাকে খইরে কাছীর (প্রভূত কল্যাণ) দেয়া হয়েছে।”

এর পরিপ্রেক্ষিতে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেছেন, “যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন পর্যন্ত দুনিয়া বিরাগী হয়ে থাকতে পারবে তার মন ও মননকে মহান আল্লাহ পাক হিকমতের ঝর্ণাধারা প্রবাহিত করে দিবেন এবং তার যবানকে হিকমতের বাগ্মীতায় পূর্ণ করে দিবেন। (ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন-৭/৩১৩)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “দুনিয়া বিরাগী এবং হারামের ভয়ে ভীত এই দুটি বিষয় মানুষের হৃদয়ের মধ্যে প্রতিরাতে নূর বা আলো দান করে। যদি এ দুটি বস্তু এমন হৃদয় দেখতে পায় যার মধ্যে ঈমান ও লজ্জা থাকে তবে তারা উভয়ে সেই হৃদয়ে অবস্থান করে। আর এরূপ হৃদয় দেখতে না পেলে তখনই চলে যায়।” (ইহয়াউল উলূমিদ্দীন-৭/৩১৩)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “দানশীল ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটবর্তী, লোকের নিকটবর্তী এবং জান্নাতের নিকটবর্তী, জাহান্নাম থেকে দূরে। আর বখীল বা কৃপন লোক মহান আল্লাহ পাক থেকে দূরে, লোকদের থেকে দূরে, জান্নাত থেকে দূরে, জাহান্নামের নিকটবর্তী। বখীল বা কৃপনতা দুনিয়ার প্রতি আসক্তির ফল এবং দানশীলতা দুনিয়ার প্রতি বিরাগীর ফল।

দূরুদ শরীফ হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্ট মুবারক লাভের সবচেয়ে সহজ এবং বিশেষ উছীলা

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

“আমার প্রতি অধিক দুরুদ শরীফ পাঠকারী কিয়ামতের দিন আমার সর্বাধিক কুরবত মুবারক লাভ করবেন”।
(তিরমিযী শরীফ)

সূরা তওবা শরীফ উনার ৬২ নং আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে একটা ঘটনা উল্লেখ করা হয় । যখন এই আয়াত শরীফ নাযিল হলো যে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহান আল্লাহপাক উনাকে সন্তুষ্ট করতে হবে, তখন প্রধান ৪ ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে এসে আরজী করলেন,

ইয়া রসূলাল্লাহ, হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমরা জানতে পেরেছি, আমরা বুঝতে পেরেছি যে, মহান আল্লাহপাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে প্রথমে আপনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জন করতে হবে। সেজন্য আমরা চারজন এসেছি চারটি আরজু নিয়ে। আপনি দয়া করে আমাদের সেই চারটি আরজু যদি কবুল করতেন, তাহলে আমরা ইতমিনান লাভ করতে পারতাম।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কি আরজু নিয়ে এসেছেন?

প্রথমে আরজু পেশ করলেন মালাকুল মউত হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার সন্তুষ্টি মুবারকের লক্ষ্যে আমি নিয়ত করেছি, আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহপাক উনার বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি দশবার পবিত্র দুরুদ শরীফ পাঠ করবে, আমি এমনভাবে তার রুহ কবজ করবো যেমন আমি অতীতে হযরত নবী এবং রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রুহ মুবারক কবজ করেছি।
তখন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরজু কবুল করলেন।
সুবহানাল্লাহ!

দ্বিতীয়ত আসলেন হযরত ইসরাফীল আলাইহি সালাম। তিনি বললেন ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নিয়ত করেছি আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি দশবার দুরুদ শরীফ পাঠ করবে সেই কঠিন হাশরের দিন মানুষ যখন গুনাহ ফিকিরে পেরেশান থাকবে তখন আমি সিজদায় পড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সুপারিশ করে তার জিন্দেগি সমস্ত গুনাহ-খতাগুলি আমি ক্ষমা করিয়ে দিব ।
তখন নূরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজু ও কবুল করলেন ।
সুবহানাল্লাহ!

এরপর তৃতীয়ত আসলেন হযরত মিকাইল আলাই সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নিয়ত করেছি আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহপাক উনার বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি মাত্র দশবার দুরুদ শরীফ পাঠ করবে, কঠিন হাশরের দিন মানুষ যখন পানির পিপাসায় হন্য হয়ে ঘুরতে থাকবে, হাউজে কাউছারের পানি ব্যতীত কোন পানি থাকবেনা, তখন আমি স্বয়ং নিজ হাতে হাউজে কাউছারের পানি নিয়ে তাকে পান করাবো।
সুবহানাল্লাহ! যে পানি পান করার পর জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার পিপাসা লাগবেনা৷
সুবহানাল্লাহ!
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজুও কবুল করলেন।
সুবহানাল্লাহ!

এরপর চতুর্থত আসলেন হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নিয়ত করেছি আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি মাত্র দশবার দুরুদ শরীফ পাঠ করবে, আমি তাকে হাতে ধরে চোখের পলকে পুলছিরাত পার করে জান্নাতে পৌছিয়ে দিবো৷
সুবহানাল্লাহ!
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজুও কবুল করলেন।
সুবহানাল্লাহ!

এর ফলশ্রুতিতে দাড়ালো, কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মাত্র দশবার দুরুদ শরীফ পাঠ করে, তাকে চারটি বিশেষ মর্যাদা দান করা হবে। মূলত হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির মূল।তাই উনার পবিত্র দুরুদ শরীফ সমস্ত ভালাইয়ের চাবিকাঠি। দুরুদ শরীফ ব্যতিত দুয়া কবুল হয় না, নামায কবুল হয় না। আবার দুরুদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে ভুলে যাওয়া বিষয় স্মরণ হয়, গুনাহ খতা ক্ষমা হয়, রোগ ব্যধি হতে শিফা লাভ হয়। সামগ্রিক ভাবে জীবনের প্রতিটি বিষয়ে দুরুদ শরীফ পাঠের কোন বিকল্প নেই।

%d bloggers like this: