চরম বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী ইহুদী এজেন্ট জাকির নায়েক

Zakir Nayekআজকাল অনেকেরই অন্যতম আলোচনার বিষয় হচ্ছে জাকির নায়েক। কারো কাছে জাকির নায়েক হচ্ছে অনেক বড় হিরো। কারো কাছে বিশাল দ্বীন প্রচারকারী। কিন্তু আসলেই জাকির নায়েক কোন শ্রেনীর সেটা একটু জেনে নেয়া যাক :

প্রসঙ্গ ডা: জাকির নায়েক :

বর্তমানে কিছু যুবক শ্রেনীর মানুষের কাছে হট ফেবারেট নাম হচ্ছে জাকির নায়েক। এর কারন হচ্ছে ডা: জাকির নায়েক যে ধর্মের প্রবর্তন করার কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন এটা সহজেই মানুষের নফসকে আকর্ষিত করে। অথচ ইসলামে নফসকে তুষ্ট করে নিয়মনীতি প্রনোয়ন করা সম্পূর্ণ হারাম। আমি জাকির নায়েক সম্পর্কে কিছু লিখি না, মূলত লেখার রুচি হয় না। কারন এই লোকটার দিকে তাকালেই বোঝা যায় সে একটা ভন্ড।
হাদীস শরীফে আলেম ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য বর্নিত আছে-

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুগন জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রসূল্লাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমরা কার সংসর্গ গ্রহন করবো ? জবাবে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-

(১) যাকে দেখলে আল্লাহ পাকের কথা স্বরন হয়।
(২) যার কথা শুনলে দ্বীনি ইলিম বৃদ্ধি পায়।
(৩) যার আমল দেখলে পরকালের কথা স্বরন হয়।
(মুসনাদে আহমদ,সুনানুল কুবরা )

এখন এই হাদীস শরীফ থেকেই জাকির নায়েকের অবস্থান দেখুন –

(১) জাকির নায়েকের দিকে তাকালে প্যান্ট, শার্ট,কোর্ট,টাই পড়া কোন একজন ইহুদী অথবা খ্রিস্টানের কথা মনে হয়।

(২) জাকির নায়েকের কথা শুনলে সমাজে ফিৎনা বৃদ্ধি পায়। কারন সে বিগত ১৪০০ বছরের চলে আসা ইসলাম বাদ দিয়ে নতুন নতুন মতবাদ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। যেমন- রাম কৃষ্ণ আল্লাহর নবী ছিলেন, বেদ আল্লাহর কালাম ইত্যাদি। নাউযুবিল্লাহ!!

(৩) জাকির নায়েকের যেহেতু কোন আমলই দেখা যায় না তাই তার আমল দেখে পরকালের জন্য কোন আমল করার কোন ইচ্ছা কারো মধ্যে সৃষ্টি হয় না। জাকির প্রকাশ্যে মহিলাদের সাথে মেলামেশা করে, সারা দেহে কোন সুন্নত নাই, তাই তার আমল দেখে মানুষ বিদয়াতি হচ্ছে।

সূতরাং হাদীস শরীফের ফয়সালা থেকেই দেখা যাচ্ছে, জাকির নায়েকের সংসর্গ গ্রহন করা যাবে না এবং তার সংসর্গ মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
মূলত কথা হচ্ছে, জাকির নায়েকের মত লোকের জন্য ইসলাম নিয়ে কথা বলার কোন যোগ্যতাই নাই। জাকির নায়েক হচ্ছে সাধারণ একজন জেনারেল শিক্ষিত মানুষ। সে অনুবাদ পড়ে ফতোয়া দিয়ে থাকে। তাকে যদি সনদ সহ একটা হাদীস আরবী ইবারত সহ পড়তে বলা হয় আমার দৃঢ় বিশ্বাস সে ৫০ গ্লাস পানি খাইয়াও পড়তে পারবে না।
জাকির নায়েক কি করে ফতোয়া প্রদান করতে পারে ??

– জাকির নায়েক কি আরবী সম্পর্কে পূর্ন জ্ঞান রাখেন ?
– জাকির কি আরবী ব্যাকরন জানেন ?
– জাকির কি নাহু ছরফ জানেন ?
– জাকির কি আরবের প্রাচীন ইতিহাস জানেন?
– জাকির কি কুরআনে অর্থ সহ হাফিজ ?
– জাকির কি নাসেখ মানসুখ কি জিনিস জানেন ?
– জাকির কি উছুলে তাফসীর জানে ?
– জাকির কি সব আয়াতের শানে নযুল জানেন ?
– জাকির কি পাঁচ লক্ষ হাদীস শরীফ আরবী এবারত সহ বলতে পারেন ?
– জাকির কি উছুলে হাদীস জানেন ?
– জাকির কি আসমাউর রেজাল সম্পর্কে জানেন ?
– জাকির কি জরা তাদ্বীল সম্পর্কে জানেন ?
– জাকির কোন হাদীস নাসেখ এবং কোনটা মানসুখ সেটা জানেন?
– জাকির কি আরবী বালাগাত সম্পর্কে জানেন?
– জাকির কি হাদীসের শরাহ পড়ছেন ?
– জাকির কি কুরআন হাদীস থেকে মাসায়ালা ইস্তেমবাত করতে পারেন ?
– জাকির কি ফিক্বাহ সম্পর্কে জানেন ?
– জাকির কেন ফিক্বাহ পড়তে হবে সেটা কি জানেন ?

বলুনতো জাকির নায়েক এগুলোর কোনটা জানে ? আরো শত সহস্র বিষয় আছে যেগুলা না জানলে ফতোয়া প্রদান করা যাবে না। অথচ সম্পূর্ণ ব-ক্বলম এক লোক স্বঘোষিত মুস্তাহিদ সেজে বসে আছে। এগুলা হচ্ছে মূলত ইহুদীদের এজেন্ট। মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য এধরনের এজেন্ট ইহুদীরা তৈরী করে থাকে। এর বহু প্রমান মুসলমানদের ইতিহাসে আছে। মুসলমান একতা বিনষ্ট করতে এমন বহু লোক সব যামানাতেই কাজ করেছে, এখনো করবে এটাই স্বাভাবিক।
জাকির ভক্তদের একটাই গর্ব জাকির নাকি অনেক বিধর্মী মুসলিম বানাচ্ছে !!!
ভাইজানেরা আপনারা যাচাই করে দেখেছেন আসলেই জাকির কাউকে মুসলমান বানাইছে কিনা ? সে নিজের তৈরী পীস টিভিতে ভাষন দেয় আর ইসলাম বিদ্বেষী হিন্দু রাষ্ট্রে তার বক্তব্য শুনে বিধর্মী মুসলিম হয় অনেক হাস্যকর বিষয়। যেখানে মুসলমান গরু কুরবানী করতে পারে না, আজান দিতে পারে না সেই দেশে হিন্দু জাকিরের ওয়াজ শুনে মুসলমান হবে আর ইসলাম বিদ্বেষী হিন্দু সরকার বসে বসে আঙ্গুল চুষবে এটা ভাবা যায় ? বাস্তবে এমন হলে পীস টিভি বন্ধ করে জাকিরকে এতদিনে ভেনিস করে ফেলতো। কই জাকিরকে তো কেউ কিছু বলে না ? হিন্দুদের সাথে এত পীরিত কি করে হলো ? জাকির নিজেই হিন্দুদের প্রতিনিধি। মূলতঃ ঘটনা হচ্ছে যারা মুসলমান হওয়ার অভিনয় করে থাকে তারা জাকিরের বেতনভুক্ত কিছু এজেন্ট। মানুষের সেন্টিমেন্ট নিজের দিকে ডাইভার্ট করতে এসব নাটক দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সহ অনেকেই করেছে আবার ধরাও খেয়েছে। পারলে ঐ নওমুসলিমদের একটু খোঁজ নিন দেখবেন থলের বিড়াল বেরিয়ে গেছে।

হাদীস শরীফে আছে- তোমরা কার কাছ থেকে ইলিম অর্জন করছো তাকে যাচাই করে নাও। (মুসলিম শরীফ)

তাই মুসলমানদের জন্য যাচাই বাছাই করে ইলমে শরীয়ত এবং তরীক্বতের বিজ্ঞ আলেম এবং সুন্নতের পূর্ন আমলদার ব্যক্তিকে অনুসরন করতে হবে। এসকল ভন্ড জাকির টাইপের লোকদের অনুসরণ করা যাবে না। তাহলে ইহকাল এবং পরকাল উভয়ই বরবাদ হবে।

আসুন জাকির নায়েককে আরো নিয়ে দুটি কথা বলি, এবং কিছু প্রশ্ন জাকির নায়েকের কাছে উপস্থাপন করি –

জাকির নায়েক এবং তার অনুসারীরা হচ্ছে লা-মাযহাবী সালাফী ফের্কার লোক। এরা পূর্ববর্তী ইমাম মুস্তাহিদদের মানে না, এরা মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য বলে, “আমরা কুরআন এবং সহীহ হাদীস মানি। কোন ব্যক্তি অনুসরণ করি না।”
ভালো কথা কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ মানবেন এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু মিস্টার জাকির নায়েক দয়া করে বলবেন কি আপনি কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ সহীহ করে পড়তে পারেন কিনা ?
আপনি কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ কিভাবে পড়েন ?
আপনি অনুবাদ ছাড়া নিজ থেকে কি কুরআন শরীফ হাদীস শরীফের অর্থ করতে পারেন ?
যদি না পারেন তবে আপনি ইচ্ছায় অনিচ্ছায় অন্য মানুষের অনুবাদকে অনুসরন করে সেই অনুবাদকারকের ব্যক্তি তাকলীদ করলেন।
তাই নয় কি ?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি যেহেতু আরবী জানেন না সেহেতু আপনি কি করে নিশ্চিত হন আপনি যে অনুবাদকে অনুসরন করে ফতোয়া দিচ্ছেন সেটা ঠিক ?
আপনার যেহেতু এটা জানার সুযোগ নাই তাই আপনাকে আপনার ভাষাতেই বলতে হয় আপনি অনুবাদকের অন্ধ অনুসরণ করছেন।
যেটা আপনার অনুসারীরা বলে, আমরা অর্থ জেনে কুরআন পড়ি।”
তবে এখন যদি আমি প্রশ্ন করি কুরআন শরীফের এবং হাদীস শরীফের অনুবাদ করে পড়া এটার একটা সহীহ দলীল কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ থেকে দেন। আপনি কি দিতে পারবেন ?
যদি দিতে না পারেন তবে আপনার উছুল অনুযায়ী আপনি বিদয়াত করছেন।
এবার আসুন আপনাদের মত মূর্খ ব-ক্বলম লোক কুরআন অনুবাদ করে পড়লে কি কি সমস্যা হতে পারে সে বিষয়ে একটু আলোচনা করা যাক।
আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
ووجدك ضالافهدي
সরাসরি শাব্দিক অর্থ: আল্লাহ পাক আপনাকে (নবীজি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোমরাহ/পথভ্রষ্ট/বিভ্রান্ত/ পেয়েছেন অতঃপর হিদায়েত দিয়েছেন।” নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক
( সূরা দ্বোহা ৭নং আয়াত শরীফ)

মিস্টার জাকির নায়েক , পৃথিবীর যত লুগাতের কিতাব আছে খুলে দেখুন উক্ত আয়াতে বর্নিত ضال শব্দের অর্থ কি আছে।
আরবী বিখ্যাত লুগাত “তাজুল আরুস” এর ৭ম খন্ড ৪১০ পৃষ্ঠায় আছে-
والضلل محركة قد الهدي
অর্থ: ضال বলা হয় হিদায়েতের বিপরীত বিষয়কে অর্থাৎ গোমরাহী, পথভ্রষ্টতা ও বিভ্রান্তিকে।”

এখন সর্বপ্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, মিস্টার জাকির নায়েক আপনি কি উক্ত আয়াতের সরাসরি শাব্দিক অনুবাদ পড়ে বলবেন নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গোমরাহ ছিলেন ? নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।
আমার বিশ্বাস আপনার মত ইহুদীর দালাল তাই বলবে। আচ্ছা যদি আপনি সেটাই বলেন তবে দেখুনতো এই আয়াত শরীফ গুলোর কি ব্যাখ্যা হবে..
আল্লাহ পাক বলেন-
ما ضل صاحبكم وما عوي
অর্থ: তোমাদের সঙ্গী হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না কখনো গোমরাহ হয়েছেন না বিপথগামী হয়েছেন।”
( সূরা নজম ২ নং আয়াত)

কুরআন পাকে আরো ইরশাদ হয়,-
ليس بي ضللة ولكني رسول من رب العلمين
অর্থ: হে আমার ক্বওম ! আমার নিকট গোমরাহী বলতে কিছু নেই বরং আমি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের প্রেরিত রসূল।” ( সুরা আ’রাফ ৬১)

এ দুটি আয়াত শরীফ থেকে আবার দেখা যাচ্ছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা হিদায়েতের উপর ছিলেন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে আপনি সূরা দ্বোহার ৭ নং আয়াতের শাব্দিক অর্থ করলে সূরা নজম ২ নং আয়াত শরীফ এবং সূরা আ’রাফ ৬১ নং আয়াত শরীফ অস্বীকার করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে আপনি নিজ যোগ্যতায় কি করে সমন্বয় সাধন করবেন ?
প্রথমত আপনি আরবী জানেন না দ্বিতীয়ত আপনি উছুল জানেন না। তাহলে আপনি বলুন আপনার মত লোক আয়াত শরীফ এবং হাদীস শরীফের অপব্যাখ্যা করবেনাতো কে করবে ?

[ নোট : সূরা দ্বোহার ৭ নং আয়াত শরীফের শাব্দিক অর্থ নেয়া যাবে না, তা’বীলী অর্থ নিতে হবে। আর মুফাসসিরিনে কিরামগন যে তা’বীল করেছেন সেটা হচ্ছে- ” হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আল্লাহ পাক আপনাকে কিতাবহীন পেয়েছেন, অতঃপর আপনাকে কিতাব দান করেছেন।”]

সূতরাং আপনি যে সমাজে মূর্খ শ্রেনীর লোকদের কাছে গুলিস্তানের হক্বারদের মত ধোঁকা দিয়ে মিথ্যা ঔষধ বিক্রি করছেন সেটা কিন্তু প্রমানিত হয়ে গেলো।

আরেকটি দৃষ্টান্ত দেখুন আল্লাহ পাক বলেছেন,
وكلوا واشربوا حتي يتبين لكم الخيط الابيض من الخيط الاسود
সরাসরি শাব্দিক অর্থ: তোমরা খাও এবং পান করো যতক্ষণ না তোমাদের জন্য সাদা সুতা কালো সুতা থেকে থেকে পার্থক্য হয়।”
(সূরা বাক্বারা )

এখানে আয়াত শরীফে خيط শব্দের লুগাতী অর্থ সূতা। তাহলে خيط الاسود অর্থ হয় কালো সূতা এবং خيط الابيد অর্থ হয় সাদা সূতা। এখনকি আপনি শাব্দিক অর্থ পড়ে রোজার দিনে বালিসের নিচে একটা কালো সূতা আরা একটা সাদা সূতা নিয়ে শুয়ে থাকবেন ? যাতে সেহেরী শেষ সময় জানতে সকালে উঠে সাদা সুতা এবং কালো সূতা পার্থক্য করার কোশেশ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে নিশ্চয়ই আপনি কুরআন শরীফের উপর আমল করতে পারবেন কি বলেন ?
করেন কি এই কাজ ????
মিস্টার জাকির নায়েক ! এই আয়াতের সাদা সূতা এবং কালো সূতা দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে সেটা জানতে আপনার এই আয়াতের শানে নযুল জানতে হবে। আর আপনিতো ব-ক্বলম অনুবাদ পইড়া মুফতী আপনি কেমনে এর শানে নযুল জানবেন ?
সূতরাং বোঝা গেলো আপনার দ্বারা কুরআন হাদীসের বিভ্রান্তিকর ফতোয়া ছাড়া আর কিছু আশা করা বোকামী। কারন আপনি এই লাইনে এখনো চাইল্ড।

[ নোট : উক্ত আয়াতে কালো সূতা দ্বারা রাতের অন্ধকার এবং সাদা সূতা দ্বারা সুবহে সাদিককে বুঝানো হয়েছে। শানে নযুল সকল তাফসীরের কিতাব হযরত আদী ইবনে হাতেম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ঘটনা দ্রষ্টব্য ]

এইখানে বোঝার সুবিধার্থে দুইটি আয়াত শরীফের উপস্থাপনা করলাম এমন আরো শতশত আয়াত শরীফ আছে যেগুলা জবাব দিতে পারবেন না। আর হাদীস শরীফের আলোচনা এখানে আর নাইবা করলাম। নাসেখ মানসুখ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর চাইলেতো কাপড় নষ্ট করে ফেলবেন।
আপনি কোন জোরে লাফালাফি করেন? আপনার একশ্রেণীর মূর্খ অন্ধ অনুসরণকারী আপনার মজার মজার ফতোয়াতে ভুলতে পারে, কিন্তু আলেম সমাজের স্যন্ডেলের ধুলার যোগ্যতাও আপনার নাই।
আপনি পাবলিক সেন্টমেন্ট নিজের দিকে নিতে অনেক নাটক সাজাতে পারেন। আপনি বিভিন্ন ধর্মের লোকদের সাথে বিতর্ক করে মানুষের চোখে ধুলা দেন। যেখানে রামায়নের লিখক নিজেই বলে রাম কৃষ্ণ হিন্দু ধর্মের কল্পিত চরিত্র আর আপনি সেই কল্পিত চরিত্রদের মুসলমানদের নবী হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেন ????
যেখানে ১৪০০ বছর আগেই নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খ্রিষ্টান এবং ইহুদীদের ধর্ম বাতিল ঘোষনা দিয়েছেন, বলেছেন এই ইহুদী নাছারারা তাদের কিতাব বিকৃত করেছে, নিজেদের রচিত মিথ্যা কথা তাদের কিতাবে ঢুকিয়েছে আর আপনি মিস্টার জাকির নায়েক পাবলিকের নজর নিজের দিকে ঘোরাতে খ্রিষ্টানদের সাথে তাদের সেই বিকৃত কিতাবের রেফারেন্স দিয়ে তর্ক করেন !!
যাদের কিতাবই ভ্রান্ত সেটা দিয়ে তর্ক করার কি কারন থাকতে পারে ? কুরআন পাকে সরাসরি বলা হয়েছে” লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন” হে কাফিরেরা তোমাদের ধর্ম তোমাদের কাছে আমাদের ধর্ম আমাদের কাছে।” আর আপনি গিয়ে তাদের মিথ্যা ধর্মের সাথে তর্ক করে খুব পন্ডিতি জাহির করছেন।
মুসলমানদের মধ্যে যেখানে আজ এত বিভেদ সেখানে ঐক্য প্রতিষ্ঠা না করে আপনি নতুন নতুন মতবাদের জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন। এ থেকে সহজেই আপনার উদ্দেশ্য…….. এবং আপনি কোন মিশন এবং কাদের মিশন নিয়ে কাজ করছেন সেটাও সহজেই বোঝা যায়।

আর রাম কৃষ্ণ নবী হতে পারে এই কথার দ্বারা জাকির নায়েক যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে সেটা দেখুন:

জাকির নায়েক বলেছে,” কুরআন শরীফে মাত্র ২৫ জন নবীর কথা বলা হয়েছে। অথচ আল্লাহ পাক বলেছেন এমন কোন জনপদ নেই যেখানে আমি সতর্ককারী পাঠাইনি। সে অনুযায়ী হিন্দুস্তানেও নবী এসেছিলো। সে জন্য রাম এবং কৃষ্ণ নবী হতে পারে নাও হতে পারে।”
এ কথার দ্বারা জাকির নায়েক রাম এবং কৃষ্ণকে নবী হওয়ার একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। এর ফলে সুক্ষ্মভাবে জাকির নায়েক যেটা বোঝাতে চেয়েছে, কৃষ্ণ যদি নবী হয় তবে-

(১) কৃষ্ণ ছোটবেলায় গাছে উঠে পুকুরে মহিলাদের গোসল করা দেখতো এবং তাদের কাপড়গুলো চুরি করে নিয়ে যেত। দুই হাত উত্তোলন করে তার কাছে কাপড় ফেরত নিতে আসার শর্তে সে মহিলাদের নগ্ন দেহ দর্শন করে কাপড় ফেরত দিত। এখন যদি কৃষ্ণকে নবী ধরে নেয়া হয় তবে জাকির বোঝাতে চেয়েছে একজন নবীর পক্ষে ছোটবেলায় এমন খারাপ চারিত্রের হওয়া সম্ভব।
আসতাগফিরুল্লাহ !! নাউযুবিল্লাহ !!
(২) রাধা হচ্ছে কৃষ্ণের আপন মামি। আপন মামির সৌন্দর্যে কৃষ্ণ মোহিত হয়ে এক রাতে রাধাকে ধর্ষন করে। আর রাধাও তার ধর্ষন উপভোগ করে। পরে নিজের ধর্ষিত মামিকে নিজের রক্ষিতা হিসাবে নিজের কাছে রেখে দেয়। জাকির নায়েক কৃষ্ণকে নবী হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে এটা বুঝাতে চেয়েছে একজন নবীর পক্ষে এমন কুচরিত্রের হওয়া সম্ভব।”
আসতাগফিরুল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ !
(৩) উইকিপিডিয়া তথ্য অনুযায়ী কৃষ্ণ এর ১৬১০০ জন গোপীনি বা রক্ষিতা ছিলো। অর্থাৎ ষোল হাজার বছর বাঁচলেও প্রতিদিন একটা করে রক্ষিতা ভক্ষন করেছে কৃষ্ণ। অর্থাৎ সারাদিন সব কাজ রেখে শুধু মহিলাবাজী করেছে। জাকির নায়েক কৃষ্ণকে নবী হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে এটাই বুঝতে চেয়েছে একজন নবীর পক্ষেও এমন বিপুল সংখ্যক রক্ষিতা পালন সম্ভব।
নাউযুবিল্লাহ! আসতাগফিরুল্লাহ !!

এবার আশা করি বুঝতে পেরেছেন জাকির নায়েকের পলিসি। এটা মূলত সে করেছে হিন্দুদের প্ররোচনায়। কারন স্বভাবতই হিন্দুদের বদচরিত্র দেবতা নিয়ে সবাই ঘৃণা করে থাকে। মুসলমানদের অন্তর থেকে এটা দূর করতে হিন্দুরা জাকির নায়েককে ব্যবহার করেছে। এর ফলে তারা যেটা বুঝতে চেয়েছে-
– রাম কৃষ্ণ বাইচাঞ্চ নবী হতেও পারে তাই তাদের সমালোচনা করা যাবে না।
– এরা যদি নবী হতেও পারে তাই এদের রীতির উপর শ্রদ্ধা রাখতে হবে।
– যেহেতু এরা নবী হতে পারে তাই এদের এমন দুঃশ্চরিত্র কর্মকান্ডের জন্য কোন প্রতিক্রয়া দেখানো যাবে না। ইত্যাদি..!

দেখুন, ইসলাম হলো পরিপূর্ণ দ্বীন ব্যবস্থা। এখানে বিন্দুমাত্র সন্দেহের কোন সুযোগ নেই। সবকিছু দিবালোকের ন্যায় পরিস্কার। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেটা উজ্জ্বল, স্পষ্ট, নির্ভরযোগ্য দলীল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। যেকারনে আজ পর্যন্ত কারো পক্ষে ইসলামের বিরুদ্ধে কোন যুক্তি দ্বার করানো সম্ভব হয় নাই। অথচ এই হিন্দুর দালাল জাকির নায়েক ওরফে কাফির নালায়েক রাম কৃষ্ণ নামক সম্পূর্ণ ভিত্তীহীন কাল্পনিক গাজাখুরী গল্পের বদচরিত্র নায়ককে নবী হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলে। এটা সে করেছে মূলত হিন্দুদের খুশি করতে এবং মুসলমানদের বিভ্রান্ত করতে।
এই হলো হিন্দু এজেন্ট জাকির নায়েকের ষড়যন্ত্র। দুঃখের বিষয় একশ্রেণীর মূর্খ জাহেল এসব কিছুই বোঝে না। তারা অন্ধভাবে জাকির পুজায় মগ্ন।
আল্লাহ পাক সবাইকে দ্বীনের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন

এখন আসুন জাকির নায়েক একজন দাঈ হিসাবে নিজেকে পরিচয় দেন। অর্থাৎ দ্বীনের রাস্তায় মানুষকে আহ্বানকারী হিসাবে। অনেক কুরআন হাদীসের দলীল দিয়ে সে মানুষকে অবাক করে দেয়ার চেষ্টা করে। ভালো… কিন্তু একজন দাঈ এর পোষাক পরিচ্ছদ কেমন হওয়া উচিত ?

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত অনুসারে পোষাক পরা উচিত নাকি বিধর্মীদের পোশাক পরিচ্ছদ পরা উচিত?
এই প্রশ্ন করলে অবশ্য জাকির ভক্তরা বলে থাকে ইসলামের নাকি কোন পোষাক নাই। যুগের চাহিদা অনুযায়ী পোষাক পরতে হবে।
নাউযুবিল্লাহ !!
তবে কি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতদের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পোষাক পরতে বলছেন ?
নাকি সুন্নতের অনুসরন করতে বলেছেন ?
পোষাক সম্পর্কে দলীল দেওয়ার পূর্বে আমাদের এই বিষয়টা আগে বুঝতে হবে যে, একটা পোষাক মানুষের বাহ্যিক পরিচয়ের একটি নিশ্চিত প্রমান হিসাবে নির্দেশক। অর্থাৎ আপনি যে মুসলমান এ বিষয়টা আপনাকে যেন দূরে থেকে দেখলেই বোঝা যায়। কিভাবে বোঝা যাবে ? আপনি যদি সুট, কোট, শার্ট, প্যন্ট, টাই পরে কোন এক খ্রিষ্টানের পাশে বসে থাকেন কারো পক্ষে কি বোঝা সম্ভব আপনি মুসলমান না খ্রিষ্টান ??
অথচ আপনি যদি একটি পরিপূর্ণ সুন্নতী পোষাক পরে থাকেন আপনাকে হাজার কোটি লোকের ভিরেও সহজেই বলে দেয়া যাবে, এ লোকটি একজন মুসলমান।
ইসলাম হচ্ছে পরিপূর্ণ দ্বীন ব্যবস্থা। এখানে সকল কিছুর ফায়সালা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। কোন কিছুর অভাব এখানে নেই। আপনার পরিচায়ক হিসাবে যে একটি পোষাক থাকা আবশ্যক় সে জন্য একজন মুসলমানের কি ধরনের পোষাক হওয়া দরকার সেটার পূর্ন বিবরন হাদীস শরীফে বর্নিত রয়েছে। অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মুবারক থেকে শুরু করে পা মুবারক পর্যন্ত যে পোষাক মুবারক পরিধান করেছেন সেটাই হচ্ছে উম্মতের জন্য সুন্নতী পোষাক এবং মুসলমান জাতির পরিচয় প্রদর্শক।
আসুন আমরা দেখি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পোষাক মুবারক কেমন ছিলো-
عن ام سلمة رضي الله عته قالت كان احب الثياب الي رسول الله صلي الله عليه و سلم القميص
অর্থ: হযরত উম্মে সালমা আলাইহাস সালাম বলেন, পোষাক সমূহের মধ্যে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সর্বাধিক প্রিয় ছিলো “ক্বামীছ”।

দলীল-
√ শামায়িলুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,- অষ্টম অধ্যায়ে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পোষাকের বিবরন অধ্যায়,- হাদীস শরীফ নং ৫৫,৫৬,৫৭
লেখক- হযরত ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
√ সুনানে আবু দাউদ ২/২০২
√ সুনানে ইবনে মাজাহ ২৬৪ পৃষ্ঠা।

উক্ত হাদীস শরীফ থেকে দেখা গেলো, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয় এবং পরিধানের পোষাক ছিলো “ক্বামীছ”।

উক্ত ক্বামীছের বর্ননা বা ব্যাখ্যায় এসেছে-
” ক্বামীছ বা কোর্তা বলা হয়, যা সেলাই করে পরিধান করা হয়। যার দুটি আস্তিন (হাতা) একটি গেরেবান (যেখান দিয়ে মাথা প্রবেশ করানো হয়) আছে। যা জুব্বা চাদর ইত্যাদির নিচে পরিধান করা যায়, যা পশমী হবে না।’”
দলীল-
√ মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া আলাশ শামায়েলে মুহম্মদীয়- লিবাস অধ্যায়।

এছাড়া হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদা রংয়ের মাথার সাথে চাকপাশ থেকে লেগে থাকে এমন চার টুকরা বিশিষ্ট সুতী কাপড়ের টুপি পরতেন, সিলাই বিহীন সুতী কাপড়ের লুংঙ্গী পরতেন, মাথা মুবারকে কালো, সবুজ , এবং সাদা রংয়ের পাগড়ি মুবারক পরিধান করতেন, পাগড়ি মুবারকের উপর সাদা রুমাল মুবারক ব্যবহার করতেন, এবং ক্বদম মুবারকে চামড়ার দুই ফিতা বিশিষ্ট ক্রসবেল্ট সেন্ডেল মুবারক পরতেন।

দলীল-
√ মুসলিম শরীফ ১/৪৪০
√ নাসায়ী শরীফ ২/২০০০
√ মুছান্নাফে আবী শায়বা ৮/২৩৭
√ বুখারী শরীফ ২/৮৬৫
√ আবু দাউদ শরীফ – কিতাবুল লিবাস।
√ তবারানী শরীফ।
√ মেরকাত শরীফ শরহে মিশকাত,
√ ফতহুল বারী ১০/২৫৫
√ ইরশাদুস সারী ৮/৪১৭
√ শামায়িলতুত তিরমিযী ৯ পৃষ্ঠা।
√ জামিউল ওয়াসিল ১/২১৩

[ ইনশাআল্লাহ! এ বিষয়ে সকল পোশাক মুবারকের দলীল দিয়ে খুব শিঘ্রই একটা নোট লিখবো ]

হাদীস শরীফে আছে, যে আমার একটি সুন্নতকে মুহব্বত করলো সে আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে আমাকে মুহব্বত করলো সে জান্নাতে আমার সাথেই থাকবে।”
দলীল-
√ তিরমিযী শরীফ।
√ মিশকাত শরীফ কিতাবুল ঈমান।

তাহলে একজন মুসলিম হিসেবে সুন্নতের মুহব্বতে সুন্নতের আমল করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা একবার বলুন ?
প্রতিটা হাদীস শরীফের কিতাবে “কিতাবুল লিবাস” বা পোষাকের বিবরন নিয়ে অধ্যায় আছে। সেখানে পোষাক সমূহের বর্ননা স্পষ্ট রয়েছে।
এখন বলুন সহীহ হাদীস শরীফ সমূহে সুন্নতী পোষাকের এত স্পষ্ট বিবরন থাকতে জাকির নায়েক কেন কোর্ট, প্যন্ট, টাই ইত্যাদি পরিধান করে ? তবে কি আকবর যেমন সকল ধর্ম মিশ্রিত করে কুফরী দ্বীনে এলাহি চালু করেছিলো, সেরকম ভাবে জাকির নায়েকও কি বর্তমানে কোন ডিজিটাল ধর্ম বানাতে চায়?

জাকির নায়েক টাইপের সবার কাছ থেকে কি ফতোয়া , মাসায়ালা ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করা যাবে ?

পবিত্র ইলিম হচ্ছে অত্যন্ত মূল্যবান এবং সম্মানিত বিষয়। কিছু কিতাব পড়লেই আলেম হওয়া যায় না। যে আলেম দাবীদার লোকের ভিতর ভিতর আল্লাহ ভীতি নেই, শরীয়তের কোন আমল নাই, সুন্নত নেই, বেপর্দা, ছবি তোলে, হালাল- হারাম তমীয করে না এরা কোন দিনও আলেম না। হাদীস শরীফে আছে, ঐ ব্যক্তি আলেম যে ইলিম অনুযায়ী আমল করে।”

সূতরাং যারা নিজেরাই ইসলাম অনুযায়ী, সুন্নত অনুযায়ী আমল করে না তারা নামধানী মৌলবী হতে পারে কিন্তু কখনোই আলেম হবে না।
ক্বিল্লতে ইলম ক্বিল্লতে ফাহম অর্থাৎ কম জ্ঞান কম বুঝই হচ্ছে ফিতনা সৃষ্টির কারণ। আর ফিতনা সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
الفتنة اشد من القتل
অর্থ : ফিতনা হচ্ছে কতল অপেক্ষা বড় গুনাহ। ”
(পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯১)

আর না জেনে কোন মাসয়ালা বললে বা মাসয়ালার জাওয়াব প্রদান করলে তার অপরাধ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
من افتى بغير علم فقد اثمه على من افتاه
অর্থ : যাকে ইলম ছাড়াই (ভুল) ফতওয়া দেয়া হয়েছে (ভুল ফতওয়া আমল করার কারণে) তার যত গুনাহ হবে তা ফতওয়াদাতার উপর বর্তাবে।
দলীল-
√ মিশকাত শরীফ

মূলতঃ জাকির নায়েকের মত তাকওয়া-পরহেযগারিতা নেই এমন নামধারী ব্যক্তিরাই মনগড়া, ভুল ফতওয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে থাকে।

এ শ্রেণীর নামধারী ব্যক্তির থেকে দূরে থাকার জন্য পবিত্র হাদীছ শরীফে মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يكون فى اخر الزمان دجالون كذابون يأتونكم من الاحاديث بما لـم تسمعوا انتم ولا اباؤكم فاياكم واياهم لا يضلونكم ولا يفتنونكم.
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা বলবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও কখনো শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবেই তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না এবং ফিতনায় ফেলতে পারবেনা।”
দলীল-
√ মুসলিম শরীফ
√ মিশকাত শরীফ

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফখানা মূলত আলিম নামধারী ব্যক্তিদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে। এখানে তাদেরকে দাজ্জালে কাযযাব অর্থাৎ চরম মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু অন্য বর্ণনায় তাদেরকে উলামায়ে ‘সূ’ অর্থাৎ নিকৃষ্ট আলিম, শাররাশ শাররি অর্থাৎ সৃষ্টির নিকৃষ্টতর প্রাণী বলা হয়েছে এবং আরো বলা হয়েছে যে, তাদের আবাসস্থল জাহান্নামের সর্বনিকৃষ্টতম স্থান জুব্বুল হুযনে। নাউযুবিল্লাহ!
অতএব, নামধারী ভন্ড বেপর্দা, বেশরা, বদ আক্বীদার জাকির নায়েক উলামায়ে ‘সূ’দেরই অন্তর্ভুক্ত। এদের থেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মাসয়ালা-মাসায়িল জানা বা গ্রহণ করা জায়িয নেই।

ছহীহ মুসলিম শরীফ-এ বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ان هذا العلم دين فانظروا عمن تأخذون دينكم
অর্থ : “নিশ্চয়ই (পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ) উনাদের ইলমই হচ্ছে দ্বীন। অতঃপর তোমরা লক্ষ্য করো কার নিকট থেকে দ্বীন গ্রহণ করছো।”
দলীল-
√ মুসলিম শরীফ
√ মিশকাত শরীফ

অতএব, যাকে তাকে অনুসরণ করা, যার তার নিকট ইলম শিক্ষা করা, মাসয়ালা জিজ্ঞেস করা বা তা গ্রহণ করা জায়িয নেই। এটা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে মুবারক নির্দেশ। .
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فاسئلوا اهل الذكر ان كنتم لا تعلمون
অর্থ : তোমাদের কোন বিষয় জানা না থাকলে যাঁরা আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালা উনাদেরকে জিজ্ঞেস করে তা জেনে নাও।
(পবিত্র সূরা নহল শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৩)

সুতরাং কিছু জানতে হলে আল্লাহ ওয়ালা হক্বানী আলেমদের কাছ থেকে জানতে হবে।
আর ভন্ড মোল্লাদের অনুসরন না করার জন্য আল্লাহ পাক বলেছেন-
” তোমরা ঐ ব্যক্তিকে অনুসরণ করো না যার অন্তর আমার যিকির থেকে গাফিল, একারনে (যিকির থেকে গাফিল থাকার কারনে) সে তার নফসকে অনুসরণ করে এবং তার কাজ গুলো হয় শরীয়তের খেলাপ।”
( সূরা কাহাফ ২৮ নং আয়াত শরীফ)

তাই ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানতে হলে এই জাকির নায়েক বা এ শ্রেনীর লোক থেকে দূরে থেকে আল্লাহ ওয়ালা হক্কানী আলেমদের অনুসরণ করতে হবে।

Posted on নভেম্বর 14, 2015, in ইহুদী এজেন্ট জাকির নায়েক. Bookmark the permalink. এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান